সংগৃহিত
চাক বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, যাদের বসবাস মূলত বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে। চাকদের নিজেদের ভাষা রয়েছে, যা চাক ভাষা নামে পরিচিত। “চাক” শব্দের অর্থ তাদের ভাষায় “দাঁড়ানো”।
চাক জনগোষ্ঠীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিচে দেওয়া হলো:
চাকরা মূলত বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় (যেমন: বাইশারি, কামিছড়া, ক্রোক্ষং, বাকখালি, আলেখ্যং, ক্রোয়াংঝিড়ি ও ডুছড়ি) বসবাস করে। এছাড়াও, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেও তাদের বসবাস রয়েছে।
চাকদের নিজেদের ভাষা আছে, যা চাক ভাষা নামে পরিচিত। এটি চীনা-তিব্বতি ভাষাগোষ্ঠীর একটি ভাষা। চাক ভাষার একাধিক কথ্যরূপ বিদ্যমান।
চাকরা ঐতিহ্যবাহী জীবনধারা ও সংস্কৃতি অনুসরণ করে। তাদের সংস্কৃতিতে নিজস্ব গান, নৃত্য, এবং উৎসব রয়েছে।
চাক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী রয়েছে। তবে, তাদের মধ্যে বৌদ্ধধর্মের অনুসারীর সংখ্যা বেশি।
চাকরা মূলত কৃষি, মাছ ধরা এবং পশুপালনের উপর নির্ভরশীল।
চাকরা নিজেদের “আচাক:” পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, যদিও তাদের কখনো “চাক”, “সাক”, বা “মিঙচাক” নামেও ডাকা হয়,
চাকরা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, যারা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে বসবাস করছে।
চাকদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, লোককথা, গান, ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ। তাদের উৎসবের মধ্যে রয়েছে থিংকানাই (গ্রামরক্ষক দেবতার কাছে বলী উৎসর্গের উৎসব), লাব্রে (অগ্রহায়ণ পূর্ণিমা), সাংগ্রাই, কাথিং পোয়ে (কঠিন চীবর দান), কাতাং য়িশু পোঃ, তেংছংবুক লাব্রে (কার্তিক পূর্ণিমা), আংনাইবুক পোয়ে (নবান্ন উৎসব) ইত্যাদি সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব।
চাকদের জীবনধারা বৈচিত্র্যময়। শিশুর জন্ম ও নামকরণ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদির মধ্যে নাইংছাঙাহাং-এ অবস্থান, পুতরংবুওয়ে (জন্মপরবর্তী অনুষ্ঠান), ভেগলুংশাত পো (চুংবংলং উচ্ছেং ছাহেকা) উল্লেখযোগ্য। বিবাহ সংক্রান্ত প্রথার মধ্যে আচাংগায়ুগা (কনে দেখা), চাঁগায়ুগা (কোষ্ঠী বিচার)সহ আরও অনেক প্রথা পালন করা হয়।
এছাড়া মৃত্যুপরবর্তী আচার, কাবাকে শয়ন, তালাহ্-তে স্থাপন, দাহকার্য, কাঙবোয়েং (শুদ্ধকরণ), ছানিংওয়াক্ সভীক ফ্রেহ, সাইন্ বলব্ (পুনঃজন্ম কামনা) চাকদের নিজস্ব সংস্কৃতিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
