সংগৃহিত
তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তারা মূলত রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাস করে। তঞ্চঙ্গ্যাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে।
তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা বাংলা ভাষার সাথে সম্পর্কিত এবং এটি পালি, প্রাকৃত এবং আদি বাংলা ভাষার মিশ্রণে গঠিত। তঞ্চঙ্গ্যাদের অধিকাংশই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তঞ্চঙ্গ্যাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, পোশাক, এবং উৎসব রয়েছে। বৈসাবি উৎসবের বিজু অংশটি তঞ্চঙ্গ্যাদের প্রধান উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরেও তারা চট্টগ্রাম শহর এবং অন্যান্য জেলায় বসবাস করে। কৃষিকাজ তাদের প্রধান পেশা। তঞ্চঙ্গ্যা একটি ঐতিহ্যবাহী এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ধারণকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্যের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলেও তঞ্চঙ্গ্যাদের আবাসভূমি রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং চিন রাজ্য এবং ইয়াংগুন শহরেও তঞ্চঙ্গ্যা রয়েছে। সেখানে তারা ‘দোইনাক’ নামে পরিচিত তঞ্চঙ্গ্যাদের ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব পোশাক রয়েছে। তঞ্চঙ্গ্যা পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হল জামা,সাদা শার্ট কিন্তু বর্তমানে পুরুষরা তাদের পছন্দমত প্যান্ট, শাট, লুঙ্গি ইত্যাদি পরিধান করেন। নারীদের পরিধেয় পোশাককে পেরোইন (থামী) বলে।নারীদের তাদের নিজস্ব পোশাক দেখতে খুবই আকর্ষণীয় লাগে।পাহাড়ি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক-পরিচ্ছদ ও অলংকার পরিধান করে তঞ্চঙ্গ্যা নারী। তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে বৈচিত্র্যও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তঞ্চঙ্গ্যা রমণীর পরনে থাকে প্রথমত সাত রঙের পিনুইন বা পিনন। পিননের দুই প্রান্তে লম্বালম্বি স্ট্রাইপ, মাঝখানে দুই প্রান্তে রঙের লম্বালম্বি স্ট্রাইপ এবং সমগ্র পিননে বিভিন্ন রঙের সুতার স্ট্রাইপ থাকে। তঞ্চঙ্গ্যা রমণীরা অতীতে নানা ধরনের অলংকার পরত। তাদের ব্যবহৃত অলংকারের মধ্যে কানে বাজ্জু ও ঝংকা, কবজিতে বাঘোর, কুচিখারু, বাহুতে তাজজুর, গলায় চন্দ্রহার, হাচুলি, সিকছড়া প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এসব অলংকার সাধারণত রুপা দিয়ে তৈরি।তঞ্চঙ্গ্যাদের গোত্র বা গছাভেদে ভাষার উচ্চারণের ক্ষেত্রে কিছুুটা পার্থক্য বিদ্যমান। তারা ১২টি গোত্র বা গছায় বিভক্ত।
